Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ও রোগ নির্ণয়ে লক্ষণীয়.


কবুতর পালন করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগ দ্বারা আমাদের কবুতর গুলোকে আক্রান্ত হতে দেখি। এসব রোগ গুলো যেমন আলাদা আলাদা লক্ষণ প্রকাশ করে তেমনি প্রতিটি রোগের জন্য প্রয়োজন আলাদা আলাদা ঔষুধ।কবুতরের ঔষুধ প্রয়োগের পূর্বে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে সেটি হলো কবুতর কোন রোগ দ্বারা আক্রন্ত সেটি খুজে বের কর।  আজ আমরা এমনি একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো, আজকের বিষয় "কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ও রোগ নির্ণয়ে আমাদের করনীয় কি?" 

চলুন তাহলে মূল আলোচনার আসা যাক, আমরা আজকের এই বিষয়টি তিনটি ধাপে আলোচনা করবো।

প্রথম ধাপঃ
 নতুন কবুতর কালেক্ট করলে করণীয় যা শতভাগ পালণীয়ঃ
০১। কবুতরকে কালেক্ট করে আনার ১০/১৫ মিনিট পর ওরস্যালাইনের পানি খেতে দিন। ১ লিটারে ১ প্যাকেট পরিমান স্যালাইন মেশান।
০২। কবুতরকে আলাদা জায়গায় রেখে, আলাদা হাতে পরিচর্যা করা উত্তম।
০৩। একই হাতে দেখভাল করলে, নিজের গোসল ছাড়া মূল ফার্মে প্রবেশ করা যাবে না এবং নতুন কবুতর সেবাদান কালীন পোশাক পরিধান করেও মূল ফার্মে যাওয়া যাবে না। অর্থাৎ অন্য পোশাক পরে মূল ফার্মে তথা পুরাতন কবুতরের পরিচর্যায় যেতে হবে।
০৪। নতুন কবুতর আনার প্রথম দিন অথবা তার পর দিন, স্যাভলোন পানি দ্বারা কবুতরের গোসল অনিবার্য। তবে খেয়াল রাখা জরুরী, গোসল করাতে গিয়ে যেন, কবুতরের ঠান্ডা লেগে না যায়।
[গোসলের নিয়মঃ কবুতরকে ধরে পানির নিচে পিঠ পর্যন্ত ডুবাতে হবে। সাবধান মাথা বা কান পর্যন্ত ডুবানো যাবে না। ডানা, লেজ ও পা ভাল করে পানিতে ওয়াস করে দিতে হবে। এরপর গায়ের পানি শুকানোর জন্য রোদ্রে রাখতে হবে।]
০৫। কমপক্ষে ১৫/২০ দিন (সম্ভব হলে ১ মাস) তাকে মূল ফার্মের বাইরে রাখতে হবে। কোন প্রকার কমপ্রোমাইজ নয়।
০৬। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করতে হবে। প্রায়ই রোদ্রে দিতে হবে ২/৩ ঘন্টা করে।
০৭। ছোট খাদ্য দিতে হবে, ৫/৭ দিন। ডাবলি, ছোলা, মটর, হড়ল এজাতীয় বড় খাদ্য দেয়া যাবে না।
০৮।  ৫/৭ দিন কারমিনা পানি দিতে হবে।
০৯। নতুন কবুতরের খাওয়া ঠিক আছে কিনা? তবে নতুন পরিবেশে স্বভাবতই সে কম খাবে। না খেলে অল্প কিছু খাইয়ে দেয়া।

ক) কবুতরের চুনা বা সবুজ পায়খানা আছে কিনা?
লক্ষণঃ
......মনে রাখা জরুরী, ড্রপিং সমস্যা আছে কিনা? তবে হ্যা, কবুতর না খেলে বা কম খেলে বা ভয়ের কারণেও সবুজ বা চুনা পায়খানা দেখা যেতে পারে।
......বুঝতে হবে, ঐটি অসুস্থ বা বদহজমের চুনা বা সবুজ ড্রপিং কিনা? বদহজম হলে, কবুতর ঝিম ধরে, গাঁ ফুলিয়ে, খাঁচার এক কোণে ঘাড় গুজে, চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে থাকবে। পেটে খাদ্য জমা থাকবে। ভাল খাবে না। খেলেও হজম হবে না। বমিও হতে পারে, আবার নাও হতে পারে।
যদি উক্ত উপসর্গ গুলির উপস্থিতি কবুতরের মাঝে থাকে, তবে তাকে চুনা বা সবুজ পায়খানার ট্রিটমেন্ট দিতে হবে।

[ কবুতরের মহামারী রোগই কিন্তু এটি। এ রোগটি উত্তরণ করতে পারলেই, কবুতর পালক ইনশাআল্লাহ সফল হবে, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ]

খ) নতুন কবুতরের সর্দী আছে কিনা?
 লক্ষণঃ নাকে পানি থাকা বা দু'আঙ্গুল দ্বারা নাক চাপ দিয়ে দেখা, নাকে পানি আছে কিনা।
 সর্দীর কারণে কবুতর বার বার ঠোট দিয়ে ঘাড়ের দু'পাশে, শরীরে বা পাক চুলকায়ে থাকে।
ফোঁসফোঁস বা খকখক কাশি থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে।
সর্দীর কারণে চোখে পানিও থাকতে পারে। পাশাপাশি চোখে পানি + চোখের পাশে লাল হয়ে ফোলা থাকতে পারে। এটা কিন্তু চোখ উঠার কারণ নাও হতে পারে।
এই উপসর্গগুলির উপস্থিতি থাকলে, জরুরী হবে তাকে সর্দীর ট্রিটমেন্ট দেয়া।

গ) নতুন কবুতরের গালের ভিতরে ঘা বা ফাঁঙ্গাস আছে কিনা।
লক্ষণঃ
কবুতরের দু'ঠোট, দুই হাতে হা করে ধরে দেখতে হবে যে, দুই চোয়ালে, জিহব্বাহ বা জিহব্বার শেষে গলার দিকে সাদা সাদা বা হলুদাভ আবরণ বা দলা পাকানো আছে কিনা? যে কারণে সে অল্প খাচ্ছে। গালে ঘা বা ফাঙ্গাস থাকলে, অতি জরুরী হবো তার ট্রিটমেন্ট দেয়া।

ঘ) চোখে ঘা বা চোখ উঠা আছে কিনা।
লক্ষণঃ
এ ক্ষেত্রে চোখ লাল হয়ে ফুলে যাবে।
চোখে পানি ও চোখের পাশে ময়লা থাকবে। এক্ষেত্রে জরুরী তখন তার ট্রিটমেন্ট দেয়া।

 অতপর ফিটনেচ ঠিক থাকলে ১৫/২০ দিন
 অতিবাহিত হওয়ার পর, কালেক্টকৃত কবুতরগুলিকে ফার্মে আনতে হবে।

💥💥💥 বি.দ্র. সুস্থ্য -অসুস্থ বা যে কোন ফার্ম হতে আনুন না কেন, এ পন্থাটি রোগ প্রতিরোধে প্রথম ও পাওয়ারফুল পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি। এক্ষেত্রে কোন ছাড় গ্রহনযোগ্য নয়।

২য় ধাপঃ
রুমে ছোট করে একটি সেলিং ফ্যান ব্যবহার এবং রুমের ভেতরের গ্যাস যুক্ত বাতাস বের করবার জন্য এডজাস্ট ফ্যান জরুরী। মনে রাখা দরকার, ফ্যানের বাতাস সরাসরি যেন কবুতরের গায়ে না লাগে।
জমাকৃত গ্যাসে, চোখে পানি, ঠান্ডা, সর্দী, কাশি, ও পায়খানা সমস্যা সহ এ জাতীয় নানান রোগ সৃষ্টি হতে পারে।

৩য় ধাপঃ
 রুমের ভেতরের তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ এর ভেতরে রাখা উত্তম।
তাপমাত্রা বেড়ে গেলে প্রয়োজন অনুযায়ী রুমের বাতাস বের করে দিতে হবে। ( গরম কালে প্রযোজ্য)
তাপমাত্রা কমে গেলে, জানালা দরজা বন্ধ করে তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে হবে। (শীতকালে প্রযোজ্য)
প্রয়োজন অনুযায়ী ইলেট্রিক লাইট জ্বালিয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। (শীতকালে প্রযোজ্য)

এ তিনটি ধাপ রোগ প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকরী।
যা করলে ইনশাআল্লাহ আপনার ফার্মটিও প্রতিরোধক অবস্থানে থাকবে।

বি.দ্র. ভিন্ন মত থাকতেই পারে। আমি যেটি করি করি এটি পেশ করলাম।

Original Writer: Badrul Alom 

(RRm Pigeon loft Norail )

Admin:-Fantail Pigeon Association Of Bangladesh 



আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান  মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

তথ্য সংগ্রহে 
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD
#pigeon #কবুতর #feralrockdove
 *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ