Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

কবুতর পালনে একজন খামারির সতর্কতা ও করনীয়ঃ





একজন খামারিকে আনেক বিষয় মাথায় রেখে খামার পরিচালনা করতে হয়। আদর্শ খাবার,পরিস্কার পানি সরবরাহ এর পাশাপাশি যেমন তাকে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সতর্ক হতে হয় তেমনি খামারে যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত রোগ প্রবেশ করতে না পারে সেদিকেউ খেয়াল রাখাটা জরুরী। একজন খামারির সব থেকে গুরুত্বপূর্ন কাজ হলো খামারে বায়ো-সিকিউরিটি বা জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।জৈব নিরাপত্তা হলো খামার যেকোন প্রকার রোগের জীবাণু,ভাইরাস এমনকি ক্ষতিকর প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত না হওয়ার সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা।খামারে জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে খামার অনাকাঙ্ক্ষিত রোগ বালাই থেকে আনেকটাই নিরাপদে থাকবে।





খামারির সতর্কতা মূলক কাজঃ

১. খামারে কবুতর ছাড়া অন্য যেকোন পাখি বা প্রানীর প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
২. খামারে যেন জালালী কবুতর না ঢুকে,এমনকি কবুতর যেন জালালী কবুতরের সাথে না মিশে-এই ব্যবস্থা করতে হবে। মনে রাখবেন জালালী কবুতর অনেক রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে।
৩. খামারে ইদুর,তেলাপোকা এসব নিয়ন্ত্রণ করবেন।
৪. নতুন কবুতর কিনে এনে কখনই তাকে সরাসরি খামারে ঢুকাবেন না,কবুতর টিকে আলাদা রেখে পর্যবেক্ষন করবেন । এই সময়ে কবুতরটিকে টিমসেন বা কোন জীবাণুনাশক দিয়ে ভালো করে গোসল করাবেন।যে কোন এসিডিফাইয়ার দিয়ে এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল কোর্স করাবেন। নতুন কবুতরটি ঠিক ভাবে খাচ্ছে কিনা,ড্রপিং কেমন খেয়াল করবেন। সোজা কথায় কবুতরটির মধ্যে কোন রোগের লক্ষণ আছে কিনা গভীর ভাবে অনুসন্ধান করবেন।যদি সব ঠিক-ঠাক থাকে তবেই খামারে উঠাবেন।
৫. কবুতর এর ঘর, খাঁচা,দাপড়ি,খাবার পাত্র,পানির পাত্র,ট্রে,বাম অর্থাৎ সমস্ত কিছু মাসে কমপক্ষে ২ দিন জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করবেন।
৬.  কবুতরের হাট কিংবা দোকান থেকে ফিরার পর বা অন্য কারো খামার থেকে আসার পর সরাসরি নিজের খামারে ঢুকবেন না। সম্ভব হলে গোসল করে অথবা জীবাণুনাশক দিয়ে হাত-পা ধুয়ে তবেই খামার ঢুকবেন। কমপক্ষে সাবান দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে কাপড় পালটে তারপর খামারে যাবেন।
৭. খামার ব্যবহারের জন্য আলাদা স্যান্ডেল এর ব্যবস্থা করে রাখবেন, বাইরে ব্যবহৃত জুতা স্যান্ডেল নিয়ে খামার প্রবেশ করবেন না।
৮. কোন গেষ্ট  খামার পরিদর্শন করতে আসলে হাত-পা জীবাণুনাশক দিয়ে জীবানু মুক্ত করে তবেই  খামারে ঢুকাবেন।
৯. কোন কবুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কিংবা অসুখের লক্ষন দেখা দিলে,তাকে যত দ্রুত সম্ভাব খামার থেকে সরিয়ে আলাদা রাখবেন।সুস্থ হলে আবার জীবানুমুক্ত করে খামারে আনবেন।
৯. খাবার দোকান থেকে কিনে আনার পর ভাল করে ঝেড়ে ৩ - ৪ ঘন্টা রৌদ্রে শুকিয়ে সংরক্ষন করবেন।
১০. রোগাক্রান্ত  কোন কবুতর মারা গেলে তা অবশ্যই মৃত কবুতরটি মটিতে পুতে ফেলবেন।
১১. ভ্যাকসিন দেওয়ার পর যদি অবশিষ্ট থাকে তবে সেটা সিরিজ্ঞ সহ মাটির নিচে পুতে ফেলবেন।
১২. ওষুধ প্রয়োগের মেয়াদ কাল শেষ হলে রা গুরা ওষুধ চাপ ধরে গেলে তা মাটিতে পুতে ফেলুন।

খামার পরিচালনায় করনীয় বিষয়ঃ

১. খামারে পর্যাপ্ত আলোবাতাসের ব্যবস্থা করুন।
২. আগে জানুন পরে কবুতর সংগ্রহ করুন।
৩. কবুতর কে ভালোমানের গ্রিড,খাবার,পরিস্কার পানি পরিবেশন করুন।
৪. মাঝে মাঝে কবুতর কে কিছু সময়ের জন্য রোদে রাখুন।
৫. সপ্তাহে কমপক্ষে ১ দিন কবুতর কে গোছল এর ব্যবস্থা করুন।
৬. ব্রিডিং কবুতর কে  নিদিষ্ট সময় পর পর কমপক্ষে ১৫/৩০ দিন এর  রেস্ট দিন।
৭. নিদিষ্ট সময় পর পর ক্রিমি কোর্স করান।
৮. নিদিষ্ট সময় পর পর টিকাদান এর ব্যবস্থা করুন।
৯. কবুতর কে প্রাকৃতিক উপাদান যেমনঃ রসুন,কালোজিরা,তুলসিপাতা,আদা,ইত্যাদি খেতে দিন।
১০. ডিমে থাকা কবুতর কে বিনা কারনে  বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকুন।
১১. নিয়মিত কবুতর এর ড্রপিং( পায়খানা)  পর্যবেক্ষন করুন।
১২. কবুতর অসুস্থ হলে অভিঙ্গ কারো পারমর্শ নিন।
১৩. রোগ হলেই একচাটিয়া এন্টিবায়োটিক  ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
১৪. শীতের দিনে করনীয় কাজ গুলো করুন।
১৫. ঔষধ এর উপর নির্ভরতা কমিয়ে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার এর প্রতি জোর দিন।
১৬. কবুতর এর খামার নিয়মিতভাবে পরিস্কার করুন।
১৭. মাসিক কোর্স  যথাযথ ভাবে সম্পুর্ণ করুন।

উপরোক্ত বিষয়াবলি যথাযথভাবে সম্পাদন এর মাধ্যমে আপনার খামার কে অনাকাঙ্ক্ষিত রোগবালাই ও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন।



প্রয়োজনীয় পোষ্ট পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকবেন এবং কোথাও ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

স্ট্যাডি ও তথ্য সংগ্রহঃ বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল,পিজন রিলেটেড বই,ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা,বিভিন্ন খামারি ও ভেটেরিয়ানদের পরামর্শ।

তথ্য সংগ্রহে এবং লেখকঃ-
জাকারিয়া হাসান এমরান
Admin
Pigeon Healthcare In BD

   *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ

  1. উত্তরগুলি
    1. ব্লগটি ভিজিটের পাশাপাশি আপনার সুন্দর একটি মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আসাকরি আমাদের ব্লগ টি ফলো করবেন এবং সবসময় আপনার মূল্যবান মতামত অব্যাহত রাখবেন।

      আপনি চাইলে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ভিজিট করতে পারেন।
      ইউটিউব লিংঃ- https://www.youtube.com/channel/UCeE2Jr6s8lse8oGhdSce43g
      *********ধন্যবাদ**********

      মুছুন
  2. This Article is helping All pigeon keeper. Thank you for Advice

    উত্তরমুছুন

Thanks for Commenting! please follow our blog and see update continue