Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

ডিমের ভেতর বাচ্চা বা ভ্রণ মারা যাবার কারণ এবং প্রতিকার।

ডিম ফোটার কিছুদিন আগে ভ্রুণ এর মৃত্যু বিষয়টি একটি খামারের সফলতার সবথেকে বড় একটি প্রতিবন্ধকতা। এমন কোন খামারি নেই যিনি এই বিষটি নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হননি,বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নতুন খামারিরা এই বিষয়ে সবথেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হন। এর কারন সঠিক
লফ্ট ব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা, না জানা। সঠিক ব্যবস্থাপনা না জানার কারনে দেখা যায় কখনো একটি ডিম ফুটে বাচ্চা হয় হয় আর একটির ভিতরে বাচ্চা মারা যাবার কারনে ফুটেনি, আবার কখনো দুইটি। এভাবে কিছুদিন চলার পর নতুন পালকরা হতাশায় পরে যান, অনেক ক্ষেত্রে পুরাতন পালকদের মধ্যে এই হতাশা কাজ করে। কেননা এভাবে একটি লফ্টে যদি প্রতিনিয়ত এটি ঘটে তবে ১০০% সেই লফ্টটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে যারা সঠিক লফ্ট ব্যবস্থাপনা, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা, এই সকল বিষয় ভালোভাবে জানেন তারা বিষয়টি নিয়ে হতাশ না হয়ে দ্রুত সমাধানের পথ বেছে নেন এবং সফল হন।

যাই হোক আজ আমরা এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো কেন ডিমের ভেতর বাচ্চা মারা যায়,এর প্রতিকার এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে আশা করবো সম্পূর্ণ আর্টিকেল টি পরে কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানাবেন।  চলুন তাহলে মুল আলোচনায় যাওয়া যাক।

অনেক গুলো কারনেই ডিম ফোটার কিছুদিন আগে বা ডিমের ভ্রনের মৃত্যু ঘটতে পারে এদের মধ্যে অন্যতম হলোঃ-

১। 'ইকোলাই-সালমোনেলা,এডিনো,ইত্যাদি রোগে প্যারেন্টস কবুতর আক্রান্ত হলে।
২। ভিটামিন ও মিনারেল এর অভাব। বিশেষত ভিটামিন 'কে' ও 'ফলিক এসিড' এর অভাব।
৩। ক্যালসিয়াম এর অভাব।
৪। কবুতর কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হলে।
৫। সঠিক লফ্ট ব্যবস্থাপনা না থাকার কারনে।
৬। অতিরিক্ত মাত্রায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারনে।

এই সমস্যার জন্য সাধারণত ভ্রুন মারা যায়। এছাড়াও আরও কিছু কারন রয়েছে যেগুলোর কারনেউ ডিমের মধ্যে বাচ্চা মারা যেতে পারে যেমনঃ-

১। ডিমে তা দেবার সময় কবুতরকে অতিরিক্ত বিরক্ত করলে।
২। ডিমের আদ্রতা ঠিক না থাকলে ডিমের ভিতর বাচ্চা মারা যেতে পারে।
৩। অত্যন্ত গরম পরিবেশে থাকলে ডিমের ভিতর বাচ্চা মারা যেতে পারে।
৪। কবুতরের মল ডিমে লেগে থাকার জন্য যথা সময়ে ডিম ভেঙে বাচ্চা বের হতে বিলম্ব হবার কারনে।
৫।অতিরিক্ত ডিম বাচ্চা করার কারনে।


চলুন আগে জানতে চেষ্টা করি কিভাবে ভ্রুণের মৃত্যু রোধে কি ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারি। 

১।সঠিকভাবে লফ্ট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যেমন পরিস্কার পরিছন্নতা,লফ্ট এর সঠিক আদ্রতা,ডিমের হাড়ি এবং কাপর জিবানু মুক্ত রাখা ইত্যাদি বিষয় গুলো সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
২। নিয়মিত সুষম খাবার এবং পরিছন্ন পানি পরিবেশন নিশ্চিত করতে হবে।
৩।একাধারে কবুতরকে দিয়ে ডিম বাচ্চা না করিয়ে ২ থেকে ৩ বার ডিম বাচ্চা করার পর অন্তত ১৫ দিনের একটা বিরতি দেয়া।এসময়ে কবুতরের জোড়া আলাদা করে রেখে খাবারের পাশাপাশি, ভিটামিন, মিনারেল এবং ক্যালসিয়াম দেয়া। এবং কৃমির কোর্স এর সময় পরিপূর্ণ হলে কৃমির কোর্স করানো।
৪। ডিমে থাকা কবুতরকে যেন দুরে যেয়ে খাবার সংগ্রহ করতে না হয় সেটি নিশ্চিত করা।
৫।অযথা কবুতরকে বিরক্ত না করা।
৬। ডিমে তা দেবার ১৬ তম দিনে একটা ভিজা ন্যাকড়া দিয়ে ডিম মুছে দিতে পারেন এতে ডিমের আদ্রতা বজায় থাকবে। ফলে সহজে বাচ্চা ডিম থেকে বের হতে পারবে।
৭। ইকোলাই সালমোনেলা রোধে লফটে মাসে অন্তত একবার টানা তিনদিন সালমোনেল্লা প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেয়া।
৮। লফ্ট ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া মুক্ত রাখতে নিয়মিত টিমসেন/ ফার্ম ৩০ জাতীয় জিবানুনাশক পুরো লফটে সপ্তাহে কমপক্ষে একবার স্প্রে করা।

এছাড়াও  অতিরিক্ত গরম হলে ডিমের আদ্রর্তা সঠিক রাখতে কবুতরের শরীরে তিন থেকে চারবার পানি স্প্রে করে দিতে পারেন এতে ডিমের আদ্রতা বজায় থাকবে।


সর্বপোরি ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে সুস্থ সবল ভাবে বেড়ে ওঠাই, একটি লফটের প্রকৃত সফলতা। আশাকরি উপরোক্ত কাজ গুলো সঠিক ভাবে করতে পারলে আল্লাহ তায়ালার রহমতে আপনাকে এই সমস্যার মধ্যে আর পরতে হবে না।

ভালো থাকুক সবার ভালোবাসার কবুতর 💞

আপনি আরও পড়তে পারেন:

কবুতরের ঠান্ডা জনিত সমস্যা চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার।

অসুস্থ কবুতরের চিকিৎসায় প্রতিকারের পাশাপাশি প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব এবং পরবর্তী পদক্ষেপ। 

কবুতরের ব্রিডিং বিরতি বা রেষ্ট কেন দিবেন ? ব্রিডিং বিরতি বা রেষ্ট এর প্রয়োজনিয়তা।


আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান  মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

Writer:-  Zakaria Hasan 

Admin Fantail Pigeon Association of Bangladesh 


 *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ