Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

কবুতরের ভাইরাস কি? খামারে ভাইরাস দেখা দিলে খামার ব্যবস্থাপনায় সর্তকতা ও করণীয়।



ভাইরাস মানেই একটি ছোঁয়াচে রোগ, যা শুধু কবুতরের মাধ্যমে কবুতরে ছড়ায় এমনটা নয় । অনেক সময় অন্য খামার থেকে কিংবা হাট-বাজার থেকে ক্রয় কৃত  কবুতর থেকেও  ছড়াতে পারে, কিংবা হাটবাজার থেকে ঘুরে এসে সরাসরি  খামারে প্রবেশ করলে শরীরের পোষাক কিংবা জুতা থেকেও ছড়াতে পারে।

এমনকি  কবুতর ডেলিভারি জার্নি কালীন সময় পথে মধ্যে  বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। কিংবা খামার পরিদর্শক এর মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। খামারে ইঁদুরের তেলাপোকার উপদ্রব বেশি থাকলে  সেখান থেকেও ছড়াতে পারে।আক্রান্ত কবুতরের ব্যবহারিত খাবার কিংবা পানির পাত্র থেকেও ছড়াতে পারে।
এমন কি ইমপোর্টেড কবুতর থেকেও ভয়াবহ ভাইরাস আক্রমণ  ছড়াতে পারে।
এজন্যই নতুন কবুতর খাবারে সংযোজন এর পূর্বে  অন্তত ১৫ থেকে 30 দিন খামার থেকে দূরে কোথাও রেখে পরিচর্যা করা উচিত। এবং কোয়ারেন্টাইন থাকা কবুতরের খাবার পাত্র, পানির পাত্র, কবুতরের খাবার, পরিচর্যার যেকোনো ইন্সট্রুমেন্ট। মূল খামারে প্রবেশ করানো কোনোভাবেই উচিত নয়। এমনকি কোয়ারেন্টাইনে থাকা কবুতরের খাবার ও পরিচর্যার কাজটি করার পরে,  পোশাক ও জুতা পরিবর্তন না করে শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে না করে কিংবা গোসল না করে মুল খামারে প্রবেশ করা উচিত নয়।কারন ভাইরাস একটি ছোঁয়াছে রোগ।

ইমপোর্টেড কবুতর প্রসঙ্গেঃ-
সাধারণত আমাদের দেশের কবুতরের তুলনায় ইমপোর্টেড কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এর অনেকগুলো কারণও আছে, যেমন উন্নত দেশের কবুতরের খামার ব্যবস্থাপনা, খাবারের তালিকা, কবুতর পালনের ধরন।
কবুতরের সিজেনাল বিল্ডিং ব্যবস্থা। সবকিছুই আমাদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
তাই ইমপোর্টেড কবুতরের শরীরে কোন ধরনের ভাইরাস জীবাণু বহন করলেও। আমাদের দেশের কবুতরের চেয়ে  ইমপোর্টেড কবুতরের শারীরিক ফিটনেস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে। তাই ইমপোর্টেড কবুতরের  শরীরে কোন জীবানু বহন করলেও শারীরিক ফিটনেস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় ফিজিক্যালি কোন সিমটম দেখা যায় না।
তবে ওই কবুতর ১৫ থেকে ৩০ দিন কোয়ারান্টিনে না রেখে সরাসরি খামারে প্রবেশ করালে। আমাদের দেশের খামারের কবুতরের শারীরিক ফিটনেস ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় দুর্বল কবুতরগুলো আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এজন্য আমাদের করণীয়ঃ-
অবশ্যই সিজেনাল ব্রীডিং ব্যবস্থা,  ফ্লাইং জোন ব্যবহার করা, সময় মত ভ্যাকসিন করানো, সঠিক সময় কৃমিনাশক ব্যবহার করা।প্রোবায়োটিক এন্ড প্রিবায়োটিক নির্ভর খামার পরিচালনা করা। পরিবেশসম্মত খামার ব্যবস্থাপনা অব্যাহত রাখা।

এরপরেও খামারে ভাইরাস আক্রমণ দেখা দিলে করণীয়ঃ-
খামারে ভাইরাস আক্রমণ দেখা দিলে এমনটা মনে করার কোনো সুযোগ নেই, যে,খামারের  দশটি কবুতর আক্রান্ত হয়েছে, বাদবাকি কবুতর সুস্থ আছে।
আসলে খামারে ভাইরাস আক্রমণ হলে তার জীবাণু পুরো খামারের সব কবুতরের মধ্যে সচল থাকে। এবং যেই কবুতর গুলির শারীরিক ফিটনেস ও  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। সেগুলোই পর্যায়ক্রমে আক্রান্ত হয়।

ভাইরাস চলাকালীন খামার ব্যবস্থাপনায় সর্তকতা ও করণীয়ঃ-
প্রতিদিন অসুস্থ কবুতরকে চিকিৎসার পাশাপাশি সুস্থ কবুতরকে prebiotic and  probiotic. জাতীয় মেডিসিন ব্যবহার করা। toxin Binder, nutrilac, polity star  salt,  এগুলো ব্যবহার করা। এবং খামারের মালিকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে, কিংবা স্বশরীরে অসুস্থ কবুতরের চিকিৎসার পাশাপাশি ভালো নার্সিং করা। অসুস্থ কবুতরের চিকিৎসায় মেডিসিন এর সাথে অর্গানিক অয়েল ব্যবহার করা, এতে কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, মেডিসিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে। এবং টাল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। অবশ্য টাল নামের কোন রোগ কবুতরের নেই। টাল হবার কারন ভিটামিন B1 B2 B6 B12 কবুতরের শরীরে কম থাকা,  ড্রপিং এর সাথে তেলতেলে যে পদার্থ বের হয়ে যায়,  তার নাম  অর্গানিক অয়েল। যা শরীরে ঘাটতি দেখা দিলে কবুতর টাল বা ঘাড় বাঁকা হয়ে যায়।

👉প্রতিদিন খামারে জীবানুনাশক  স্প্রে করা, ট্রেতে থাকা ড্রপিং গুলো প্রতিদিন  পরিষ্কার করা।
👉পারলে দিনে দুইবার তিনবার পেপারগুলো চেঞ্জ করে নতুন পেপার বিছিয়ে দেওয়া।
👉 এবং নির্দৃষ্ট লোক ছাড়া খামারে কাউকে প্রবেশ করতে না দেয়া ভালো।

বিতর্ক নয় সতর্কতাই উদ্দেশ্য। কারন একটি ভুল একটি খামার শেষ করে দিতে পাড়ে। শুধু কবুতর নয়, মৃত্যু হতে পারে একজন কবুতর পালকের সারাজীবনের লালিত স্বপ্ন।


আপনার খামার ভাইরাস এবং রোগমুক্ত থাকুক এই কামনায় আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান  মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।

আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

Acknowledgment of gratitude:- Khandokar Asaduzzaman Kajol 
Senior Pigeon Breeder and Admin(Only Fancy Pigeon Club in Bangladesh)

আল্লাহ হাফেজ

 🌼🌼Thank You For Visit Our Site🌼🌼


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ