Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা)রোগের কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার,এবং প্রতিরোধে।

Infectious Coryza

 Infectious Coryza-ইনফেকশাস করাইজাঃ-

কবুতরের বিভিন্ন রোগ গুলোর মধ্যে Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা) একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত তীব্র সংক্রামক রোগ যা Avibacterium paragallinarum, ব্যাকটেরিরা এই রোগের জন্য দায়ী। শুরুতে এই ব্যাকটেরিয়াটির নাম ছিলো Haemophilus paragallinarum এবং  Haemophilus gallinarum. এটি কবুতরের শ্বাসতন্ত্রের রোগ গুলির মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক রোগ। এই রোগটিকে যদিও বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে যেমনঃ- Cold, Catarrh, Infectious Catarrh, Roup,এবং Haemophilus Infection ইত্যাদি। যদিও এদের মধ্যকার সংক্রমণ এবং লক্ষণ সমুহের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।


Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা) রোগটি Infectious Catarrh এর চেয়ে কিছুটা ভয়াবহতা লক্ষ্য করা যায়। যদিও অনেকেই রোগ দুটিকে একটি রোগ হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন। যদিও Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা) আক্রান্ত কবুতর খুব বেশি জটিল আকার ধারন না করলে মৃত্যুহার কম,তবে এটির মৃত্যুহার ২০%পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত ভাইরাসটির ১-৩ দিনের ইনকিউবেশন পিরিয়ড শেষ হয় এবং ২-৩ দিনের মধ্যে রোগের দ্রুত সূত্রপাত এবং ১০ দিনের মধ্যে পুরো ঝাঁক/লফ্ট আক্রান্ত হয়। ব্যাকটেরিয়াটি বাইরে ২-৩ দিন বেঁচে থাকে কিন্তু তাপ, শুকনো এবং জীবাণুনাশক দ্বারা সহজেই মারা যায়। যদিও রোগটি কবুতরে শরীরে খুব বেশি সংক্রমণের কোন আন্তর্জাতিক রেকর্ড নেই কেননা বেশিরভাগ সময় কবুতরের ক্ষেত্রে এটিকে Infectious Catarrh হিসেবেই ধরা হয়ে থাকে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় অঞ্চল এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় এই রোগটি পোল্ট্রি, টার্কি, কয়েল এর মধ্যে সর্বাধিক প্রভাবশালী। 


Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা)যেভাবে ছড়ায়ঃ- 

  • অসুস্থ কবুতরের সংস্পর্শে আসা।

  • অসুস্থ কবুতর থেকে নাকের শ্লে­ষ্মার মাধ্যমে।

  • আক্রান্ত কবুতরের খাবার ও পানির মাধ্যমে। 

  • বাতাসের মাধ্যমে। 


Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা) আক্রান্ত হবার কারণ গুলোঃ-

  • বায়োসিকিউরিটি ঘাটতি।

  • অতিরিক্ত  তাপমাত্রা।

  • অতিরিক্ত ঠান্ডা।

  • অপরিষ্কার আবাসস্থল।

  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।

  • এমোনিয়া গ্যাস এর প্রাদুর্ভাব।

  • পরজীবীর সংক্রমণ।

  • পুষ্টির অভাব। ইত্যাদি কারণে এ রোগের তীব্রতা ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।


Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা) রোগটির লক্ষণ সমুহঃ- 

  • নাক থেকে পানির ন্যায় তরল পদার্থ বের হয়।

  • কবুতরে মুখ,মাথা ও চোখ ফুলে যায়।

  • চোখে প্রদাহ হয়  এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ে।

  • পিউরুলেন্ট ওকুলার এবং অনুনাসিক স্রাব।

  • গলোদেশ ফুলে যাওয়া।

  •  হাঁচি।

  • 10-40%ডিম উৎপাদন হ্রাস।

  • শারীরিক কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া। 

  • ফ্লাইংয়ে অনীহা। 

  • খাবার ছেড়ে দেয়া বা তুলনামূলক কমিয়ে দেয়া। 


Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা)প্রতিরোধে করনীয়ঃ-

  • জীবনিরাপত্তার অন্যান্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

  • পরিষ্কার খাদ্য ও পানি সরবরাহ করতে হবে।

  • আক্রান্ত খামার কয়েকদিন পরিত্যক্ত রাখতে হবে। পরে জীবাণুনাশক স্প্রে করে নতুন কবুতর প্রবেশ করাতে হবে।

  • ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে এবং খামারে কার্যকর জীবাণুনাশক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

  • কবুতরের ব্রিডিং পট নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে ।

  •  ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে ।

  • ঘর সবসময় শুকনো রাখতে হবে ।                             


Infectious Coryza (ইনফেকশাস করাইজা)এর চিকিৎসা বা প্রতিকারঃ- 

এই রোগটির প্রতিকারে রেজাল্ট পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে 

মেডিসিন হিসেবে টক্সস্লিন প্লাস,প্যারাসিটামল,এমোক্সিসিলিন,লিভোফ্লক্সাসিন কফ সিরাফ, এবং সর্বদা উষ্ণ তাপমাত্রায় রাখা,ঠান্ডা পানি বয়কট করা ইত্যাদি কার্যকরি ভুমিকা রাখতে পারে। 



চিকিৎসাঃ- 


দুপুরে ও রাতে।

আধা লিটার কুসুম গরম পানির সাথে 

  • ১ মিলি টক্সস্লিন, 

  • ১.৫ গ্রাম কসমিক্স প্লাস,

  • ০.৫ গ্রাম রেনা স্পিরিন,

  • ১ মিলি লিভোম্যাক্স এবং

  •  মক্সিলিন ভেট ১মিলি।  

একসাথে মিক্স করে  কবুতরের সাইজ বয়স ও ওয়েট  বুঝে, কুসুম কুসুম গরম থাকা অবস্থায় ১০ মিলি কিংবা ২০ মিলি  করে দুপুরে ও রাতে খাওয়াতে পারেন । 


সকালে।

 সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে। 

  • এক চামচ মধু,

  • এক চামচ আদার রস,

  • এক চামচ কালিজিরার তেল। 

  • দুই কোষ রসুন।

একসাথ মিক্স করে কুসুম গরম থাকা অবস্থায় ১০/১৫ মিলি করে খাওয়াতে পারেন। 

দিনে দুইবার ভিনেগার মিশ্রিত পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করে,গ্যাটিসন ড্রপ লাগাতে পারেন।


উল্লেখ্য বিষয়গুলি যথাযথ নিয়ম মেনে, সঠিক নার্সিং করতে পারলে ভালো রেজাল্ট  পাওয়া সম্ভব।মনে রাখা জরুরি এই রোগের প্রতিকারে মেডিসিন এর চেয়ে, নার্সিং এর গুরুত্ব অনেক বেশী।


আর্টিকেলে উল্লেখিত চিকিৎসা পদ্ধতিটি অভিজ্ঞ কবুতর খামারি এবং সুনামধন্য ব্রিডার খন্দকার আসাদুজ্জামান কাজল ভাই এর পোস্ট থেকে সংযোজন করা হয়েছে। 


আপনি আরও পড়তে পারেন:

কবুতরের ঠান্ডা জনিত সমস্যা চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার।

অসুস্থ কবুতরের চিকিৎসায় প্রতিকারের পাশাপাশি প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব এবং পরবর্তী পদক্ষেপ। 


আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান  মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।

আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

Acknowledgment of gratitude:- Khandokar Asaduzzaman Kajol 
Senior Pigeon Breeder and Admin(Only Fancy Pigeon Club in Bangladesh)



 *******Thank You *******

আল্লাহ হাফেজ




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ