Ticker

10/খামার ব্যবস্থাপনা/ticker-posts

কবুতর পালকদের উদ্দেশ্যে খন্দকার আসাদুজ্জামান কাজল ভাই এর কিছু কথা ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ।

কবুতর পোষা শখের হলেও এ এক মারাত্মক নেশা, অনেকেই এই নেশায় আসক্ত হয়ে না যেনে না বুঝে  শুধু শখের বসে অনেক টাকা ইনভেস্ট করে ফেলে,বিশেষকরে ফেন্সি কবুতরের ক্ষেত্রে  এমনটা বেশী হয়ে থাকে।
কিছুদিন পড়ে ঠিকি টাকার মায়া  অনুভব করে এবং তখনি  চিল্লানি দেয় গেলো গেলো আমার সব গেলো,
অথচ প্রথমে  যখন কবুতর সংগ্রহ করে তখন টাকা কোনো ব্যাপারি না। ধার করে হলেও কোয়ালিটি কবুতর কেনা চাই।
নামকরা সব বড় ব্রিডারদের মতো আমারো দামি কবুতর চাই, কোয়ালিটি চাই, হরেক রকমের ভালো ব্রিডের কবুতর চাই।
👎
অথচ একজন বড় ব্রিডারের ফেন্সি কবুতর বিষয়ক যে অভিজ্ঞতা আছে বা সংগ্রহ আছে সেগুলি কতো অপেক্ষা  কষ্ট ও ধৈর্য্যের ফল সেটা বুজতে চেস্টাও করেনা।
ওনাদের শখ হয়েছে টাকা আছে  তাই  ওনাদের কাছে ফেন্সি কবুতর পোষা যেনো দেশী মুরগী পোষা মনে হয়।
👎
 দীর্ঘদিন কবুতর পুষে অনেক  ঘাতপ্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়ে এটুকু অভিজ্ঞতা হয়েছে যে আমাদের দেশের ফেন্সি কবুতর পালকদের বেশীরভাগ পালকের কবুতর পোষার ধরনটাই সঠিক নয়।
👎
যেমন
ইমপোটের কবুতর যে দেশ থেকে আমদানি করা হয় ঐ দেশে কবুতর পোষোর ধরন ,
সেখানে কবুতর  থাকে খামারের ন্যাচারাল পরিবেশে অলওয়েজ ফ্লাইং জোনে, শুধু ব্রিডিং সময় হলেই নির্দিষ্ট যায়গায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খাচায় রাখা হয়।
আর এ কারনেই ঐ কবুতরের  এন্ট্রি বডি তৈরি হয় শারীরিক ফিটনেস অটুট  থাকে রোগপ্রতিরোধ খমতা বাড়তি থাকে।
👎
আমাদের দেশে ঠিক এর বিপরীত করা হয়।
যেমন  লক্ষ টাকা দিয়ে ইমপোটের কবুতর কেনা হয় এবং বাসায় নিয়ে একটা আবদ্ধ খাচায় আটকে দেয়া হয়।
অতি দ্রুত সময়ে  বাচ্চা পাবার আশায়  ক্যালসিয়াম রিকোভারি পিল ইসেল  সহ বিভিন্ন রকমের ভিটামিন দিতে শুরু করে।
অনেক সময় কবুতর ব্রিডিং মুডে থাকলে ডিম বাচ্চা পেয়েও যায়।
 তবে বেশীরভাগ খেত্রেই কবুতরের আচরন ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পরিবর্তন  হয়ে যায়।  এবং দীর্ঘমেয়াদী রেস্টে চলে যায় ।
 সব খেত্রে হবে এমন নয় অভিজ্ঞ লোকের হাতে পরলে দুএক মাসের মধ্য কবুতর ফিটনেস ফিরে পেলে আবার  ডিম বাচ্চা দেয়া শুরু করে।
👎
ইমোটের কবুতর আমাদের দেশে আসার পড়ে কি কি কারনে,
ডিম বাচ্চা করা রানিং কবুতর  ও ধারাবাহিকতা হারায়।
🌺১. আবহাওয়াগত কারেন,
🌺২. পরিবেশগত কারনে,
🌺৩.খাবার ও আবাস্থল কারনে
🌺৪. অলওয়েজ ফ্লাইং জোনে থাকা কবুতর হঠাৎ  বদ্ধ খাচায় আবদ্ধ হওয়ার কারনে।
👎
 এবার আসা যাক আমাদের দেশের কিছু ফেন্সি কবুতর পালকের কবুতর পোষার ধরন বিষয়ক আলোচনায়
👎
 🌺১. ফেন্সি কবুতর পুষতে চায় কবুতর কিনতে অনেক টাকা ইনভেস্ট করে,অথচ  কবুতর রাখার ঘরটা পরিবেশসম্মত নয়।
ওখানে ইনভেস্ট নাই,
কবুতরের সাইজ অনুযায়ী খাচা ঠিক নাই,
কবুতরের ঘরে পর্যাপ্ত আলোবাতাস আসা যাওয়ার সু ব্যাবস্থা নাই ।
শারীরিক এক্সারসাইজ করার ব্যাবস্থা নাই অর্থাৎ ফ্লাইং জোন নাই  ।
এমন কি ভালো খাবার ও সচ্ছ পানির ব্যাবস্থা ও নাই,
মানসম্পন্ন গ্রিট নাই, লক্ষ টাকার কবুতর পুষবে আর গ্রিট কিনবে ৩৫ টাকায়,সঠিকতর পরিচর্যা নাই।
শুধু অন্যের পরামর্শে  মাসিক কোর্স আর মেডিসিন এবং  অনলাইনে হেল্প পোস্টি  একমাত্র ভরসা।
🌺২.একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন ।
করোনার জন্য সরকার ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে বললো  কিন্তু আপনি তা মানলেন না।ঘড়ে থাকতে পাড়লেন না ।
আর যারা ১৪ দিন নিজ ইচ্ছায় ঘড়ে বন্দি থেকেছিলো তারাও বলছে আমার ওজন ১৫ কেজি বেরে গেছে। তাহলে কবুতরের খেত্রে কি অন্য কিছু হবে।
এভাবে বছরের পর বছর যদি কবুতর খাঁচায় বন্দি থাকে তাহলে  কবুতর শরীরে এক  অনাকাঙ্ক্ষিত ফ্যাট তৈরি হয়, যার কারনে কবুতরের এন্ট্রি বডি নষ্ট হয়।
 রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়,  সামান্য ছোটখাটো রোগের আক্রমণ থেকেও মুক্তি পাওয়াও তখন কঠিন হয়ে যায়। আবার অনেকে বলে আমি ২২ আইটেমর খাবার খাওয়াই  প্রতি মাসে ভিটামিন খাওয়াই তাহলে আমার কবুতরের সমস্যা হবে কেনো?
👎উত্তরঃ-
যতো ভালো খাবার  খাওয়ান  তাতে কোনো  কাজ হবেনা,
মনে রাখবেন প্রতিটা প্রাণীর  ন্যাচারাল জীবন চাই  শারীরিক ভাবে একটিভ  থাকার জন্য। উন্মুক্ত পরিবেশে বিচরণ চাই , আবদ্ধ জীবন  অসস্থীকর।
আবদ্ধ জীবন  শারীরিক ফিটনেস নষ্ট করে,
সেটা মানুষ হক কিংবা কবুতর।

 পরামর্শঃ-
🌺১. ফেন্সি কবুতর পোষার প্রথম শর্ত  কবুতরের আবাস্থল পরিবেশসম্মত হতে হবে যথেষ্ট আলোবাতাস আসাযাওয়ারা ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
🌺২.কবুতরের সাইজ ও হাইট অনুযায়ী খাচার ব্যাবস্থা থাকতে হবে
🌺৩.শারীরিক এক্সারসাইজের জন্য ফ্লাইং জোন থাকতে হবে
🌺৪.মানসম্মত গ্রিট অতি প্রয়োজন
🌺৫.শুখনা টাটকা খাবার দিতে হবে সেটা ২২ আইটেমের না হলেও চলবে।  কারন পরিবেশসম্মত খামারে ফ্লাইং জোনে থাকা কবুতর শারীরিক শক্তি বেশী থাকে।
 কবুতরের এন্ট্রি বডি তৈরি হয়, তাই রোগপ্রতিষেধক খমতা বেশী থাকে এবং অনেক ভিটামিনের অভাব নিজ থেকেই পুরুন হয়ে যায়।
যেমন ভিটামিন  B  ভিটামিন D ও ক্যালসিয়াম এগুলি এমনিতেই অনেকটা  পুরণ হয়।
তাই মাসিক কোর্সের দরকার হয়না মাঝে মাখে দিলেই চলে।
মাসিক কোর্স মানি যা অসুস্থ  প্রাণী জন্য, কোনো সুস্থ প্রাণীর জন্য মাসিক মেডিসিন দরকার হয়না।।
 নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি যদি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হয়ে থাকেন তবেকি আপনি মাসিক কোনো মেডিসিন খান না শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য ভালো খাবারের পাশাপাশি শারীরিক এক্সারসাইজ করেন।
উত্তর নিজেই পেয়ে যাবেন।
তবে কিছু প্রবাইটিক প্রতি মাসেই ব্যাবহার করতে পাড়েন।
🌺৬.পানি ব্যাবহারে সতর্ক থাকতে হবে।

 পরিশেষে বলবো কবুতর পুষলে রোগবালাই হবেই  প্রতিকারের জন্য এডভান্স কোনো মেডিসিন ব্যাবহার সমাধান নয়।
উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলি মেনে খামার পরিচালনা করতে পারলে কবুতর শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকবে এন্ট্রি বডি তৈরি হবে,
রোগপ্রতিরোধ খমতা বেশী থাকবে।
ছোটখাটো রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকবে এবং যেকোনো রোগ থেকে সঠিকতর চিকিৎসায় অতি সহজেই কবুতর সুস্থ হবে।

Writer:-                       Khandokar Asaduzzaman Kajol 

Senior Pigeon Breeder and Admin(Only Fancy Pigeon Club in Bangladesh)

 

আজ এখানেই শেষ করছি আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।আসা করি সাথেই থাকবেন। নতুন এবং প্রয়োজনীয় পোষ্ট গুলো পেতে আমাদের ব্লগটি Follow  করুন এবং নিচের কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান  মতামত দিয়ে আমাদের সংঙ্গে থাকুন। এছাড়াও কোথাও কোন ভুলহলে ক্ষমাসুন্দর দৃৃষ্টিতে দেখার অনুুরোধ রইলো।
আপনাদের ভালোবাসাই আমদের আগামীর পথ চলার পাথেয় ।

আপনাদের সকলের শারীরিক সুস্থতা   ও সকলের কবুতর গুলোর সুস্থতা কমনা করে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।সবাই ভালো থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ

 *******Thank You *******

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ